Menanagar Mosque Project 2025 এবং ১৬৫ বছরের ঐতিহ্যের গল্প ।উত্তরবঙ্গের প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম কিসামত মেনানগর বড় জুম’আ জামে মসজিদ, যার ইতিহাস শুরু আনুমানিক ১৮৬০ সালে।
এই মসজিদটি কেবল নামাজের স্থান নয়-এটি ছিল সমাজের ঐক্য, ইসলামী শিক্ষা ও মানবিকতার এক প্রতীক। প্রায় ১৬৫ বছরের এই দীর্ঘ পথচলায়, স্থানীয় জনগণ তাদের ঈমান, ঐক্য ও দানশীলতার পরিচয় রেখে গেছেন যুগের পর যুগ।
মসজিদটি ২০০৩ সালে বৃহৎ পরিসরে পুনর্নির্মাণ করা হয়, যা বর্তমানে প্রায় ৫২০০ স্কয়ারফিট জায়গাজুড়ে বিস্তৃত।
সময়ের পরিক্রমায় দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ষোলটি পাড়ার প্রায় ১৫০০ মুসল্লি নিয়মিতভাবে জুম্মার নামাজ আদায় করেন।
জায়গা সংকট ও নতুন সিদ্ধান্ত । Menanagar Mosque Project 2025
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন খতিব নিয়োগের পর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। এতে মসজিদে জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে।
মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও আরামদায়ক ইবাদতের পরিবেশ নিশ্চিত করতে মসজিদ কমিটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
তিনটি প্রধান এজেন্ডা ঘোষণা
১০ অক্টোবর ২০২৫ ইং (বাদ জুম্মা) মসজিদের কার্যকরী পরিষদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও সম্মানিত মুসল্লিবৃন্দের উপস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নলিখিত তিনটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয় —
- মসজিদের তৃতীয় তলা নির্মাণ — মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা সৃষ্টি করা এবং আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
- সাততলা বিশিষ্ট আধুনিক মিনার নির্মাণ — ইসলামী স্থাপত্যের সৌন্দর্য ও পরিচিতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে।
- বৃহৎ সোলার প্যানেল স্থাপন — মসজিদ ও চারতলা হাফেজি মাদ্রাসার সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য।

উপস্থিত কমিটি ও সমাজের নেতৃত্ব । Menanagar Mosque Project 2025
সভায় সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব উপাধ্যক্ষ (অবঃ) এম. এ. বাকী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে এই মসজিদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
উপস্থিত ছিলেন:
- ইঞ্জিনিয়ার মোঃ বাহাদুর (উপদেষ্টা)
- অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক মোঃ একরামুল হক (সদস্য)
- আলহাজ্ব মোঃ নুর হোসেন সরকার (সিনিয়র সহ-সভাপতি)
- মোঃ ওবায়দুল্লাহ প্রামানিক (সহ-সভাপতি)
- মোঃ সাদেক আলী সরকার (সহ-সভাপতি)
- মোঃ আব্দুল হক (সাধারণ সম্পাদক)
- ডা. মুহাম্মাদ তানভীর সিদ্দিকী সুমন (আইটি ও প্রচার সম্পাদক)
- মোঃ মজিবর রহমান (কোষাধ্যক্ষ)
- মোঃ আতাউর রহমান (কোঅর্ডিনেটর, বড় ঈদগাঁ)
- মোঃ রমজান আলী (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক)
- মোঃ আব্দুল আলিম (সদস্য)
- মোঃ আব্দুল ফাত্তাহ (সদস্য)
- মোঃ এনামুল হক (সদস্য)
সহ আরও অনেক সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ। - অত্র এলাকার বিশিস্ট ব্যাক্তি বর্গ
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তিনটি এজেন্ডা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং অর্থ সংগ্রহ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ডা. তানভীর সিদ্দিকী সুমন।
প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ও অর্থায়ন পরিকল্পনা । Menanagar Mosque Project 2025
মসজিদ নির্মাণ প্রকৌশলী, কনট্রাক্টর ও সোলার প্যানেল কোম্পানির যৌথ হিসাব অনুযায়ী, পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা (৳৫২,০০,০০০/-) ব্যয় হবে।
অর্থায়ন পরিকল্পনা নিম্নরূপ:
প্রধান অনুদান:
- উপাধ্যক্ষ (অবঃ) এম. এ. বাকী ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে: ৳১৩,০০,০০০
- রংপুরস্থ বন্ধু-বান্ধবদের পক্ষ থেকে: ৳১৩,০০,০০০
মোট: ৳২৬,০০,০০০
কার্যকরী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের প্রতিশ্রুতি:
- আনুমানিক ৳২০,৪১,০০০ সমমূল্যের অনুদান।
এর মধ্যে:
- আলহাজ্ব ডা. মোজাফফর হোসেন ও জনাব আঃ করিম – ৭.৫ টন রড
- জনাব ওবায়দুল্লাহ প্রামানিক – ১৫,০০০ পিকেট
- ইঞ্জিনিয়ার মোঃ বাহাদুর – ১৫,০০০ প্রথম শ্রেণির ইট
- জনাব আব্দুল আলিম উদ্দিন – ৫.৫ টন রড
- প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেন – ৳৩,০০,০০০
- আলহাজ্ব মোঃ নুর হোসেন সরকার – ৳১,০০,০০০
- জনাব মোঃ আতাউর রহমান – ৳৫০,০০০
অবশিষ্ট অর্থ:
বাকি ৳৫,৫৯,০০০ স্থানীয় গ্রামবাসী ও মুসল্লিদের অনুদানের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
সোলার প্যানেল স্থাপনের পরিকল্পন
বর্ধমান বিদ্যুৎ ব্যয়ের যুগে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন হিসেবে মসজিদ ও হাফেজি মাদ্রাসায় সোলার প্যানেল স্থাপন করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
এই ব্যবস্থায় ইনশাআল্লাহ ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যাবে, যা নামাজ, দাওয়াতি কাজ ও শিক্ষার পরিবেশকে আরও উন্নত করবে।
সমাজে ইতিবাচক প্রভাব
এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কিসামত মেনানগর অঞ্চল পাবে একটি আধুনিক, নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব ইসলামী স্থাপনা।
এটি স্থানীয় তরুণদের মধ্যে ইসলামী শিক্ষা ও সমাজকল্যাণে অংশগ্রহণের আগ্রহ বাড়াবে।
একইসাথে এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হয়ে উঠবে ঐতিহ্য ও ঈমানের জীবন্ত স্মারক।
দানশীল মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান
সভা শেষে সভাপতি ও সদস্যবৃন্দ সবাইকে আহ্বান জানান—
“আল্লাহর ঘর নির্মাণে অংশগ্রহণ করা শুধু দান নয়, এটি একটি চলমান সাদকা। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী অনুদান দিন, আল্লাহর ঘর গঠনে অংশ নিন।”

অনুদান প্রদানের ঠিকানা: । Menanagar Mosque Project 2025
- উপাধ্যক্ষ (অবঃ) এম. এ. বাকী
- সভাপতি, কিসামত মেনানগর বড় জুম’আ মসজিদ
- 01730-180343
অথবা,
- আলহাজ্ব মোঃ মুজিবর রহমান
- কোষাধ্যক্ষ
- 01714-524085
- রশিদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অনুদান প্রদান করুন।
- মানুষ কেবল উপলক্ষ মাত্র, প্রকৃত অর্থে আল্লাহই এই ঘরের রিজিকদাতা।
কেন আপনি এ মসজিদে অনুদান দিবেন
মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর—ইবাদত, শিক্ষা ও ঐক্যের কেন্দ্র। এ মসজিদে অনুদান দেওয়া মানে শুধু ইট-পাথরের ভবন নির্মাণ নয়, বরং সমাজে ধর্মীয় চেতনা ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা।
আপনার অনুদান দিয়ে নামাজের পরিবেশ, কুরআন শিক্ষা, শিশু ও তরুণদের ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রতিটি টাকাই এখানে সদকা জারিয়া—যার সওয়াব চলতে থাকবে চিরকাল।
সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/p/19T7hgxmRm/
উপসংহার
Menanagar Mosque Project 2025 শুধু একটি নির্মাণ পরিকল্পনা নয়-এটি একটি ঈমানের আহ্বান, ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ, এবং ইসলামী স্থাপত্যে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
এই মসজিদ প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে, কিসামত মেনানগর অঞ্চল হয়ে উঠবে উত্তরবঙ্গের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক ইসলামী কেন্দ্র ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুন
আপনার বিশ্বে ঘটে যাওয়া সকল খবর এক ক্লিকে
রাইটারঃ Mst. Kulsum Aktar Shimu
সম্পাদক
মোঃ নাইয়ার আযম,সহকারী অধ্যাপক(পদার্থবিজ্ঞান),মজিদা খাতুন মহিলা কলেজ, রংপুর।

নাইয়ার আযম একজন নিবেদিতপ্রাণ পদার্থবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। তিনি মজিদা খাতুন মহিলা কলেজ,রংপুর এ কর্মরত আছেন এবং Studentbarta.com-ওয়েব সাইডের সম্পাদক। তিনি শিক্ষা ও অনলাইন শিক্ষার প্রতি গভীরভাবে অনুরাগী এবং নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করার মতো চিন্তাশীল লেখা প্রকাশ করেন। তার শিক্ষা জীবন শুরু হয় ক্যান্ট পাবলিক স্কুল থেকে এবং পরবর্তীতে তিনি কারমাইকেল কলেজ, রংপুর-এ উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। বর্তমানে রংপুর সিটি-তে বসবাসরত নাইয়ার আযম সবসময় শিক্ষা, অনলাইন লার্নিং এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে আগ্রহী। পদার্থবিজ্ঞানের জ্ঞানকে সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন এবং আধুনিক শিক্ষার সুযোগ প্রসারে তিনি বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।