StudentBarta.com/Breaking News ডেক্স
ভাবুন তো, পৃথিবীর এমন একটি ভূমি, যেখানে জন্ম নেওয়া শিশুরা প্রথমেই শোনে বোমার শব্দ, আকাশে আতশবাজির মতো ঝরে মিসাইল, আর রাত মানেই মৃত্যু ভয়ের ছায়া।
এটাই গাজা উপত্যকা। ছোট্ট এই এলাকা আজ বিশ্ব রাজনীতির দাবার বোর্ড, যেখানে প্রতিদিন রক্তে রাঙা হয় মাটি।

কিন্তু প্রশ্ন হলো- কেন বারবার গাজায় যুদ্ধ হয়? ইতিহাস বলছে, এর উত্তর লুকিয়ে আছে দখল, প্রতিরোধ আর অসমাপ্ত শান্তি প্রক্রিয়ার ভেতরে।
গাজার প্রেক্ষাপট
- আয়তন: ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ২৩ লাখ
- অবস্থান: ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল
- নিয়ন্ত্রণ: বর্তমানে হামাস (২০০৭ থেকে)

গাজার ইতিহাসে বড় বাঁক
- ১৯৪৮ – প্রথম আরব-ইসরাইল যুদ্ধ
ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের পর লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়ে গাজায় আশ্রয় নেয়। সে সময় গাজার নিয়ন্ত্রণে ছিল মিসর। এখান থেকেই শুরু হয় নতুন অধ্যায়।
- ১৯৬৭ – ছয় দিনের যুদ্ধ
মাত্র ছয় দিনে ইসরাইল গাজা দখল করে নেয়। গাজা তখন পরিণত হয় দখলদারিত্বের প্রতীকে।
- ১৯৮৭ – প্রথম ইন্তিফাদা
গাজার কিশোররা পাথর হাতে রাস্তায় নামে। প্রতিবাদের আগুনে জন্ম নেয় হামাস, যেটি পরবর্তীতে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।
- ২০০০ দ্বিতীয় ইন্তিফাদা
বিক্ষোভ, আত্মঘাতী হামলা আর ইসরাইলি অভিযান-গাজা আবার রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।
- ২০০৫ – ইসরাইলের প্রত্যাহার
ইসরাইল সেনা ও বসতি প্রত্যাহার করে, কিন্তু সীমান্ত অবরোধ করে রাখে। ফলে গাজা হয়ে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খোলা কারাগার।
- ২০০৭ – হামাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ
ফাতাহকে পরাজিত করে হামাস পুরো গাজা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এর পর থেকে ইসরাইল-হামাস সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

গাজার বড় বড় যুদ্ধের টাইমলাইন
- ২০০৮-০৯ সালঃ অপারেশন কাস্ট লিমিট নামে ইসরাইল বিমান ও স্থল হামলা চালায় সেই যুদ্ধে ১৪০০ এর বেশি লোকমারা যায়।
- ২০১২ সালঃ পিলার অব ডিফেন্স নামে ৮ দিনের যুদ্ধে ১৫০ এর বেশি লোক নিহত হয়।
- ২০১৪ সালঃ প্রোটেকটিভ এজ নামে ৫০ দিনের যুদ্ধে ২,২০০ এর বেশি লোক নিহত হয়।
- ২০২১ সালঃ ১১ দিনের জেরুজালেম ইস্যুর সংঘাতে ২৫০ এর বেশি লোক নিহত হয়।
- ২০২৩- ২৫ সালঃ চলমান যুদ্ধে হামাসের আকস্মিক হামলা ও ইসরাইলি প্রতিশোধে
- শিশু ও নারী সহ হাজারো হাজারো নিহত হয়। প্রতি মুহুর্তে নিহতের সংখ্যা বারছে।
- গাজার মানুষের জীবন
গাজার মানুষের জীবন
- প্রতিদিন বিদ্যুৎ, পানি ও ওষুধের সংকট
- ৫০% এর বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে
- শিশুদের স্বাভাবিক জীবন নেই, স্কুল ধ্বংস হয়ে যায় বারবার
প্রশ্ন হলো– এটা কি শুধু একটি ভূখণ্ডের সমস্যা, নাকি সমগ্র মানবতার সংকট?
শান্তির সম্ভাবনা কোথায়?
গাজার ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, শুধু যুদ্ধ নয়, আলোচনাই পারে সমাধান আনতে। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতির টানাপোড়েনে শান্তির আলো এখনো দূর আকাশে।
হয়তো একদিন শিশুরা বোমার শব্দ নয়, পাখির ডাক শুনে ঘুম ভাঙবে।
গাজা যুদ্ধ শুধু একটি অঞ্চলের ইতিহাস নয়, এটি বেদনা, প্রতিরোধ আর আশার ইতিহাস। আজ প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে- গাজা কি কোনোদিন শান্তি দেখবে?
আপনার কী মনে হয়?
নিচে কমেন্টে লিখুন, আর বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য আর্টিকেল পড়ুন।
রাইটারঃ Mst. Kulsum Aktar Shimu
আরও পড়ুনঃ
গাজায় ভয়াবহ সংকট: জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা-দুর্ভিক্ষ শুরু!
সম্পাদকঃ
মোঃ নাইয়ার আযম, সহকারী অধ্যাপক(পদার্থবিজ্ঞান), মজিদা খাতুন মহিলা কলেজ,রংপুর।

নাইয়ার আযম একজন নিবেদিতপ্রাণ পদার্থবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। তিনি মজিদা খাতুন মহিলা কলেজ,রংপুর এ কর্মরত আছেন এবং Studentbarta.com-ওয়েব সাইডের সম্পাদক। তিনি শিক্ষা ও অনলাইন শিক্ষার প্রতি গভীরভাবে অনুরাগী এবং নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করার মতো চিন্তাশীল লেখা প্রকাশ করেন। তার শিক্ষা জীবন শুরু হয় ক্যান্ট পাবলিক স্কুল থেকে এবং পরবর্তীতে তিনি কারমাইকেল কলেজ, রংপুর-এ উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। বর্তমানে রংপুর সিটি-তে বসবাসরত নাইয়ার আযম সবসময় শিক্ষা, অনলাইন লার্নিং এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে আগ্রহী। পদার্থবিজ্ঞানের জ্ঞানকে সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন এবং আধুনিক শিক্ষার সুযোগ প্রসারে তিনি বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।